দুস্থ ও অসহায় মানুষের ভরসা যেন ঝর্ণা মান্নান মেমোরিয়াল ট্রাস্ট

নিজস্ব প্রতিবেদন

দুস্থ ও অসহায় মানুষের ভরসা যেন ঝর্ণা মান্নান মেমোরিয়াল ট্রাস্ট

মান্নান ঝর্ণা ট্রাস্ট গরিব, দুঃখী ও অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর ক্ষেত্রে একটি উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করছে। এই ট্রাস্ট বিভিন্ন কার্যক্রমের মাধ্যমে অসহায় মানুষের সহায়তা প্রদান করে থাকে, যেমন খাদ্য বিতরণ, চিকিৎসা সেবা, শিক্ষা সহায়তা এবং অন্যান্য মৌলিক চাহিদা পূরণের উদ্যোগ। তাদের কার্যক্রম সমাজে মানবিক সহায়তা ও সহমর্মিতা গড়ে তোলে, যা সমাজে পরিবর্তন আনার লক্ষ্যে গুরুত্বপূর্ণ। প্রায় ১৫ বছর আগে বাগেরহাটের চিতলমারী থানার চিংগুড়ীয়া গ্রামে জন্ম হয় এই ট্রাস্টের। ট্রাস্ট এর উদ্যোক্তা মান্নান ও ঝর্না গ্রামের অসহায় মানুষের কথা ভেবে উদ্যোগ নেয় একটি ট্রাস্ট করার। তাদের এই উদ্যোগটি সফল হয়। সম্পূর্ণ নিজেদের অর্থায়নে তৈরী করেন মান্নান ঝর্ণা ট্রাস্ট। বর্তমানে কয়েক শতগরিব দুঃখী মানুষের পাশে এসে দাঁড়িয়ে আছে এই ট্রাস্ট। প্রতি মাসে তাদেরকে অর্থসহ বেঁচে থাকতে বিভিন্ন সহায়তা দিয়ে ভূমিকা পালন করছে। মান্নান ঝর্ণা ট্রাস্টের মূল উদ্দেশ্য হলো সমাজের অসহায় ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে তাদের জীবনমান উন্নয়ন করা। ট্রাস্টের উদ্যোক্তা মান্নান ও ঝর্ণা সম্পর্কে বাবাও মেয়ে। জীবনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত তারা মানুষের সহযোগিতায় পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন। তাদের মৃত্যুর পরে ট্রাস্টের হাল ধরেছে তাদেরই সন্তানেরা। বর্তমানে এই ট্রাস্টে আর্থিক সহযোগিতা করছেন যুক্তরাজ্য প্রবাসী নাজনীন আহম্মেদ, নুপুর আহম্মেদ, পিয়াংকা আহম্মেদ, ফিজানাজ আহম্মেদ ও ওয়ারিসা ইফাত। নাজনীন আহমেদ বলেন, এই ট্রাস্টি তৈরি করেন আমার নানা ও আমার মা। আজ তারা বেঁচে নাই, জীবনের শেষ মূহুর্ত পর্যন্ত গ্রামের মানুষকে ভালোবেসে গিয়েছেন। তাদের অনুপ্রেরণায় গ্রামের মানুষকে ভালোবেসেই ট্রাস্ট নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। নুপুর আহম্মেদ বলেন, একটি অজো পাড়াগাঁয়ে বেড়ে ওঠা আমার মা ঝর্ণা গ্রামের দুঃখী,অসহায় মানুষের কথা ভেবেছেন সারা জীবন। নিজের সন্তানদের মতো ভালবাসতেন গ্রামের এ সকল মানুষদের। ছোটবেলা থেকে মাকে গ্রামের অসহায় দোস্ত মানুষকে ভালবাসতে দেখে বড় হয়েছি।আজ মা বেচে নাই কিন্তু তার স্মৃতি নিয়ে এ সকল মানুষকে ভালবাসতে চাই। আর্থিক সাহায্যে পেয়ে ছেকোন শেখ বলেন,ঝর্ণা ছোট বেলা থেকে বিপদে পড়া মানুষের পাশে দাড়াতো। যে কারো দুঃখ দুর্দশা শুনলে ছুটে যেত তার কাছে। এ সময় তিনিও ঝরনা ও মান্নানের রুহের মাগফেরাত কামনা করে তাদের জন্য দোয়া করেন। এলাকাবাসী বলেন, মান্নান ঝর্ণা ট্রাস্টের এ ধরনের উদ্যোগগুলো সমাজের দুর্বল অংশের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে সহায়ক হচ্ছে এবং একটি সমৃদ্ধ ও সহনশীল সমাজ গঠনে অবদান রাখছে। তাদের কাজের মাধ্যমে অনেক পরিবার নিরাপত্তা ও আশ্রয় পাচ্ছে, যা অত্যন্ত প্রশংসনীয়। রহমতপুর কলেজিয়েট স্কুলের প্রধান শিক্ষক গণেশ চন্দ্র বলেন,নাজনীন ও নুপুর আমার ছাত্রী। অনেকবার শিক্ষদের নিয়ে তাদের বাড়ীতে গিয়েছি। ঝর্ণা ছিলেন খুব মানবিক। তাইতো তিনি গরীব দুঃখী মানুষের কথা ভেবে এই ট্রাস্টি তৈরি করেন। তার আদর্শ নিয়ে গ্রামের বিত্তবানদেরকে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য অনুরোধ করেন।

  • Related Posts

    জুলাই সনদ সই নতুন অধ্যায়ের সূচনা: মির্জা ফখরুল

    বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘জুলাই সনদ সই বাংলাদেশের রাজনীতির ইতিহাসে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছে।’ শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) বিকেলে জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় জুলাই সনদ স্বাক্ষর শেষে…

    ঘরে ঢুকে যুবকের কপালে গুলি করল দুর্বৃত্তরা

    খুলনায় বাড়িতে ঢুকে সোহেল নামে এক যুবকের কপালে গুলি করেছে দুর্বৃত্তরা। শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) দুপুরে নগরীর দুই নম্বর কাস্টমস ঘাট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় সোহেলকে (২৮) খুলনা মেডিকেল…

    Leave a Reply

    Your email address will not be published. Required fields are marked *