গণ-অভ্যুত্থানে রাজধানীতে ৭০৭ মামলা, গ্রেপ্তার ৫,০৭৯ জন

গত বছরের ৫ আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানের মুখে পতন ঘটে আওয়ামী লীগ সরকারের। প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন শেখ হাসিনা। আন্দোলনের সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের ক্যাডারদের হামলা ও গুলিতে নিহত ও আহত হয় অসংখ্য মানুষ। জাতিসংঘের প্রতিবেদনে ১ হাজার ৪০০ নিহত ও ২৩ হাজার আহতের তথ্য তুলে ধরা হয়।

আন্দোলনের সময় হত্যা ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে এখন পর্যন্ত (৫ আগস্ট ২০২৫) রাজধানীর ৫০ থানায় মামলা হয় ৭০৭টি। এসব মামলায় আসামি করা হয় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ দলটির শীর্ষস্থানীয় কয়েক হাজার নেতা-কর্মীকে।

মামলার পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হন সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাবেক বাণিজ্যবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, সাবেক মন্ত্রী আমীর হোসেন আমু, সাবেক মন্ত্রী দীপু মনি, বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি ও সাবেক মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সভাপতি ও সাবেক তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, সাবেক আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, সাবেক এমপি মমতাজ বেগম, এ এম নাঈমুর রহমান দুর্জয়, কাজী মনিরুল ইসলাম মনু, আবদুস সোবহান গোলাপ, আ ক ম সরওয়ার জাহান বাদশাসহ ৫ হাজার ৭৯ জন আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মী।

গ্রেপ্তার হন বাংলাদেশ পুলিশের সাবেক আইজিপি মো. শহিদুল হক, চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনসহ ২৩ জন পুলিশ সদস্য। গ্রেপ্তার অপর পুলিশ সদস্যরা হলেন বাংলাদেশ পুলিশের সাবেক পুলিশ কমিশনার মো. আসাদুজ্জামান মিয়া (৬৪), সাবেক ডিআইজি মোল্লা নজরুল ইসলাম (৫২), সাবেক ডিসি তানভির সালেহীন ইমন, সিলেটের সাবেক পুলিশ সুপার আবদুল মান্নান (৪৬), সাবেক পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান (৪৪), ডিবি লালবাগ জোনের সাবেক ডিসি মশিউর রহমান (৪৮), অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার (ধানমন্ডি জোন) আবদুল্লাহ হিল কাফি (৩৯), সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) মো. তানজিল আহমেদ (৩৭), এডিসি (বর্তমানে এসপি পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত) মো. শাহেন শাহ (৪১), অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার মো. জুয়েল রানা (৪৩), সাবেক গুলশান থানার ওসি বর্তমানে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রফিকুল ইসলাম (৫৮), সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আপেল উদ্দিন (৩৯), সহকারী পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা গুলশান বিভাগ) মো. ইফতেখার মাহমুদ (৩৪), যাত্রাবাড়ী থানার সাবেক অফিসার ইনচার্জ মো. আবুল হাসান (৫২), ইন্সপেক্টর (নিরস্ত্র) মাজহারুল ইসলাম (৪৯), এসআই (নিরস্ত্র) মো. সাজ্জাদ-উজ-জামান (৩৬), নায়েক সজিব সরকার (২৭), কনস্টেবল সুজন হোসেন (২০), শোয়াইবুর রহমান ও মো. বায়োজিদ বোস্তামী (২০)।

ডিএমপির প্রসিকিউশন বিভাগ এ সব তথ্য দেয়।

আজ প্রসিকিউশন বিভাগের এডিসি (প্রশাসন) মাঈন উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘চব্বিশের অভ্যুত্থানের পর হত্যা ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে মামলা হয়েছে ৭০৭টি। এসব মামলায় মন্ত্রী, এমপি, আমলাসহ গ্রেপ্তার হন ৫ হাজার ৭৯ জন। সাবেক দুই আইজিপিসহ গ্রেপ্তার রয়েছেন ২৩ পুলিশ সদস্য। মামলাগুলো বর্তমানে তদন্তাধীন।’

  • Related Posts

    জুলাই সনদ সই নতুন অধ্যায়ের সূচনা: মির্জা ফখরুল

    বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘জুলাই সনদ সই বাংলাদেশের রাজনীতির ইতিহাসে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছে।’ শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) বিকেলে জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় জুলাই সনদ স্বাক্ষর শেষে…

    জুলাই সনদ বাস্তবায়নে রাজনৈতিক দলগুলোর ৭ দফা অঙ্গীকার

    বহুল আলোচিত ‘ঐতিহাসিক জুলাই সনদে’ স্বাক্ষর করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা। এতে স্বাক্ষরকারী রাজনৈতিক দলগুলো সাত দফা অঙ্গীকার করেছেন। শুক্রবার (১৭ অক্টোবর)…

    Leave a Reply

    Your email address will not be published. Required fields are marked *