
আমাগো আয়-রুজি কম। বেশি টেয়া দিয়া ইলিশ কিননের সাধ্য নাই। হেগুলো দেহা পর্যন্তই। এলিগা এখন বড়লোকেগোর খাবার। গত দুই বৎসরই এক টুকরো ইলিশ কপালে জুটেনি।’- এমন আক্ষেপের সুরে কথাগুলো বলছিলেন দিনমজুর কামাল হোসেন। গতকাল চট্টগ্রাম নগরীর বহদ্দারহাট বাজারে মাছের দাম জানতে গিয়েছিলেন তিনি। দোকানে সারি সারি সাজানো ঝকঝকে ইলিশের দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকেন নিঃশব্দে। দাম শুনে দীর্ঘশ্বাস ফেলে অবশেষে এক কেজি তেলাপিয়া হাতে নিয়েই ফিরলেন বাড়ির পথে। সেখানে কথা হয় কমালের সঙ্গে। বলেন- ইলিশ কেনার সাধ্য তো নেই। তবুও বড় বড় ইলিশ দেখে লোভ সামলাতে পারেনি। তাই দামটা জিজ্ঞেস করছি।
কামালের মতো চট্টগ্রামের বহু নিম্নবিত্ত, নিম্নমধ্যবিত্ত ও মধ্যবিত্তের পাতে এ বছর ইলিশ ওঠেনি। অথচ ইলিশের মৌসুম প্রায় শেষ। বাজারে মাছ থাকলেও দাম এমন যে, সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরেই রয়ে গেছে ‘জাতীয় মাছ’ হিসেবে পরিচিত এই রুপালি
সম্পদ।
বৈশাখ থেকে আশ্বিন পর্যন্ত সময়কে ধরা হয় ইলিশ আহরণের মৌসুম। এর মধ্যে আষাঢ় থেকে আশ্বিন পর্যন্ত ধরা হয় ভরা মৌসুম। প্রতি বছরের মতো এবারও বৈশাখের শুরুতে ১৪ এপ্রিল মধ্যরাত থেকে ১১ জুন পর্যন্ত বঙ্গোপসাগরে ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা ছিল মাছ ধরায়। এরপর ১২ জুন থেকে আবার মাছ ধরতে শুরু করেন জেলেরা।
গত তিন মাসে বিপুল পরিমাণ ইলিশ ধরা পড়েছে বলে জানিয়েছেন জেলেরা। কিন্তু বাজারে তার প্রতিফলন নেই। চাহিদা থাকলেও দাম এত বেশি যে, অনেকেই কিনতে পারছেন না।
নগরীর বহদ্দারহাট বাজারে বর্তমানে এক কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার টাকায়। দেড় থেকে দুই কেজি ওজনের মাছের দাম ২ হাজার ৫০০ টাকা পর্যন্ত। অন্যদিকে ছোট আকৃতির ইলিশ; যেগুলো এক কেজিতে ৬-৭টি করে ধরা পড়ে- তা বিক্রি হচ্ছে ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকা দরে। আর এক কেজিতে চারটি ইলিশ হলে দাম দাঁড়ায় ৮০০ টাকা পর্যন্ত।
বেসরকারি একটি কোম্পানির চাকরিজীবী আহনাফ হোসেন বলেন, এবার ইলিশ মাছ বলতে গেলে পাতে জোটেনি। ২ হাজার, আড়াই হাজার টাকা দিয়ে ইলিশ কিনে খাওয়ার সামর্থ্য নেই। একবার ৭০০-৮০০ টাকার ছোট ইলিশ কিনেছিলাম; সেগুলো