
রাজধানীর কারওয়ান বাজার মোড়। ১৭ সেপ্টেম্বর বিকাল সাড়ে ৪টা। নিয়ম অনুযায়ী লাল-নীল সিগন্যাল বাতি জ¦লছে। তবে লাল বাতি জ¦লার পর সাইসাই করে গাড়ি চলছে। আবার নীল বাতি জ¦লার পরও গাড়ি থেমে আছে সিগন্যালে। যানজট নিরসনে রাজধানীতে পরীক্ষামূলক চালু হওয়া স্বয়ংক্রিয় ট্রাফিক সংকেত চালু করলেও সেটা মানা হচ্ছে না। আশানুরূপ ফলও মিলছে না। ফলে সেই পুরানো হাত ইশারা, লাঠি আর বাঁশি বাজিয়েই সড়কের যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করছে ট্রাফিক পুলিশ।
জানা যায়, গত ৩১ আগস্ট আবদুল্লাহপুর থেকে হাইকোর্ট পর্যন্ত সাতটি ইন্টারসেকশনে ১৮ কোটি টাকা ব্যয়ে পরীক্ষামূলক স্বয়ংক্রিয় ট্রাফিক সংকেত পদ্ধতি চালু করা হয়। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট), ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিক বিভাগ, ঢাকা ট্রান্সপোর্ট কোঅর্ডিনেশন অথরিটি (ডিটিসিএ) ও রাজধানীর দুই সিটি করপোরেশন যৌথভাবে প্রকল্পে কাজ করছে। রাজধানীতে পরীক্ষামূলক ইন্টাসেকশনের মধ্যে কারওয়ান বাজারও রয়েছে। এ ছাড়া স্বয়ংক্রিয় ট্রাফিক সংকেত চালু হওয়া বাকি মোড়গুলো হলো- হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল, বাংলামটর, ফার্মগেট, বিজয় সরণি, প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় ও জাহাঙ্গীর গেট।
ট্রাফিক পুলিশের দায়িত্বরত কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, যানবাহনের চাপের কারণে স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে তাল মেলানো যাচ্ছে না। হাতের ইশারাতেই যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। তবে ধীরে ধীরে স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে অভ্যস্ত করতেই সিগন্যাল বাতি কার্যকর করা হয়েছে।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক-উত্তর) সুফিয়ান আহমেদ বলেন, কিছুদিনেই অবস্থার পরিবর্তন হয়েছে। এখন বেশির ভাগ যানবাহন সংকেত মেনে চলাচল করছে। অভ্যস্থতা তৈরি হচ্ছে। পর্যায়ক্রমে সবাই বিষয়টি মেনে নেবেন। যারা আইন অমান্য করছেন, তাদের বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হচ্ছে। পথচারীদের বিষয়েও জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে নানা প্রচারণা চালানো হচ্ছে।
প্রকল্পটির প্রধান উদ্দেশ্য মানুষকে সিগন্যাল বাতিতে অভ্যস্ত করানো বলে জানান বুয়েটের অ্যাক্সিডেন্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ড. হাদিউজ্জামান। তিনি বলেন, আমরা অটোমেটিক ও ম্যানুয়াল দুটো পদ্ধতিই রেখেছি। ব্যস্ত সময়ে পুলিশ বক্স থেকে বাতি নিয়ন্ত্রণ করা যায়। বাংলাদেশের চেয়ে অনেক নিম্নআয়ের দেশেও ট্রাফিক সিগন্যাল আছে।
পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, সকালে অফিস শুরুর সময় এবং বিকালে অফিস ছুটির সময় সংকেত বাতি দিয়ে যানবাহন নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন। মাঝেমধ্যে পুলিশ বক্স থেকে ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে বাতিগুলো সময় বাড়িয়ে কিংবা কমিয়ে নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। তবে গাড়ির চাপ বেশি থাকলে ম্যানুয়ালি নিয়ন্ত্রণ করা হয়।