দুদক সংস্কার: ক্ষমতার অপব্যবহার বন্ধ, ঘুষ লেনদেনকে অবৈধ ঘোষণাসহ ৪৭ দফা সুপারিশ

সাংবিধানিক ও আইনগত ক্ষমতার অপব্যবহার, ঘুষ লেনদেনকে অবৈধ ঘোষণা এবং কালো টাকা সাদা করার বৈধতা স্থায়ীভাবে বন্ধ করাসহ ৪৭ দফা সুপারিশ করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সংস্কার কমিশন। আজ বুধবার (১৫ জানুয়ারি) অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে জমা দেয়া প্রতিবেদনে কমিশন এসব সুপারিশ করেছে।

দুদককে শক্তিশালী, কার্যকর প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তুলতে কমিশনারদের পদ বাড়ানো, নিয়োগ, সার্চ কমিটি, আইনের সংস্কার, বেতন বৃদ্ধি ও প্রণোদনার জন্য সুপারিশও করা হয়েছে।

সংস্কার কমিশন বলছে, দুর্নীতি রোধ একার কাজ নয়। রাষ্ট্রীয় ও অরাষ্ট্রীয় অনেক প্রতিষ্ঠানের ভূমিকা রয়েছে। যে জাতীয় কৌশল প্রণয়নের কথা বলা হচ্ছে, তাতে রাষ্ট্রীয় ও অরাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর ভূমিকা নির্ধারণ করা থাকবে; যার মাধ্যমে দুর্নীতিবিরোধী পদক্ষেপগুলো কতটুকু বাস্তবায়িত হচ্ছে, সেটি নিয়মিতভাবে নজরদারি করতে হবে।

এ কমিশন মনে করে, সুনির্দিষ্ট কিছু আইন না থাকায় অর্থ পাচার বন্ধ করা যাচ্ছে না। যে ব্যক্তি একটি প্রতিষ্ঠান ও মন্ত্রণালয়ের নেতৃত্বে রয়েছেন, তিনি ব্যক্তিগত স্বার্থ ও বন্ধুত্বের বলয় থেকে সিদ্ধান্ত নেন। এটা বন্ধে স্বার্থের দ্বন্দ্ব নিরাসন আইন দরকার।

বেনামি প্রতিষ্ঠানের মালিকানার তথ্য জাতীয় রেজিস্ট্রারে উল্লেখ থাকা উচিত বলে মনে করে দুদক সংস্কার কমিশন। যা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রয়েছে।

রাজনীতি ও নির্বাচনসংক্রান্ত অর্থায়নে স্বচ্ছতার জন্য কয়েকটি সুপারিশ করেছে কমিশন। দুর্নীতি দমনে সব সেবামূলক খাত স্বয়ংক্রিয় বা অটোমেশনের আওতায় আনার সুপারিশ করেছে। দেশের প্রত্যেক নাগরিকের দেশ-বিদেশে থাকা ব্যাংক হিসাবের লেনদেন ‘কমন রিপোর্টি প্র্যাকটিস’–এর আওতায় আনার কথা বলেছে কমিশন।

গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতেনর পর অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নিয়ে দুই ধাপে মোট ১১টি সংস্কার কমিশন গঠন করে। এর মধ্যে গত অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে গঠন করা হয় নির্বাচনব্যবস্থা, পুলিশ প্রশাসন, বিচার বিভাগ, দুর্নীতি দমন কমিশন, জনপ্রশাসন ও সংবিধান সংস্কারে কমিশন।

চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে এ কমিশনগুলোর প্রতিবেদন দেয়ার কথা ছিল। তবে কাজ শেষ না হওয়ায় ৩ জানুয়ারি প্রতিবেদন দেয়ার সময় বাড়ানো হয়। এর মধ্যে বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের জন্য ৩১ জানুয়ারি এবং বাকি পাঁচটি কমিশনকে ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত সময় বাড়ানো হয়েছিল। এর মধ্যে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন প্রতিবেদন দিতে ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত সময় চেয়েছে। দ্বিতীয় ধাপে গঠন করা কমিশনগুলোর প্রতিবেদন আগামী মাসের শেষের দিকে দেয়ার কথা।

/এমএন

  • Related Posts

    দেশকে কারা নেতৃত্ব দেবে তা বাছাই করার সময় এসেছে: তারেক রহমান

    আগামীতে কারা দেশকে নেতৃত্ব দেবে তা বাছাই করার সময় এসেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। বলেন, বিগত ১৫ বছরে শেখ হাসিনাকে দেশকে ধ্বংস করে দিয়েছে। দেশের প্রতিটি…

    গাইবান্ধায় পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় ২ জনের মৃত্যু

    গাইবান্ধা করেসপনডেন্ট: গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় এক মোটরসাইকেল আরোহী ও সবজিবাহী পিকআপে থাকা অজ্ঞাত এক হেলপারের মৃত্যু হয়েছে। শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) রাত সোয়া ১০টার দিকে রংপুর-ঢাকা মহাসড়কের গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার…

    Leave a Reply

    Your email address will not be published. Required fields are marked *