খুলনায় হঠাৎ বাড়লো এলপি গ্যাসের দাম
নতুন বছরে খুলনার বাজারে দাম বেড়েছে সব ধরনের এলপি (লিকুইড পেট্রোলিয়াম) গ্যাসের। সিলিন্ডার প্রতি একলাফে বেড়েছে ১৪০ টাকা থেকে ১৬০ টাকা করে। গত বছর কয়েকদফা দাম বেড়ে বর্তমানে ৯৬০ টাকা থেকে হাজার টাকার ওপরে বিক্রি হচ্ছে। ফলে করোনার মধ্যে সাধারণ ও মধ্যবিত্ত পরিবারের সঙ্কট আরও বেড়েছে।
এ সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহের সময় জানা যায়, খুলনায় মাসে গ্যাস সিলিন্ডারের চাহিদা প্রায় ৪ লাখ। যার পুরোটাই সরবরাহ করে বেসরকারি কোম্পানিগুলো। পদ্মা, মেঘনা ও যমুনা ডিপোর মাধ্যমে সরকারিভাবে সরবরাহ করা হয় সর্বোচ্চ ৫ হাজারের মতো। এর মধ্যে ২ হাজার সিলিন্ডার বিক্রি করে মেঘনা ডিপো, ১ হাজার ২০০ সিলিন্ডার বিক্রি করে পদ্মা ডিপো ও বাকিটা যমুনা ডিপো সরবরাহ করে।
নগরীর দক্ষিণ টুটপাড়া বড়খালপাড় বান্দা বাজারের খুচরা ব্যবসায়ী পলাশ স্টোরের মালিক মো. সিরাজুল ইসলাম পলাশ বলেন, সিলিন্ডার প্রতি হঠাত্ ১৪০ টাকা থেকে ১৬০ টাকা বৃদ্ধি পাওয়ায় মধ্যবিত্ত ও সাধারণ ক্রেতারা বিপাকে পড়েছেন। অনেকেই গ্যাসের ব্যবহার সীমিত করে বিদ্যুত্ ও কাঠের ব্যবহার বাড়িয়েছেন। একলাফে অধিক মূল্যবৃদ্ধির বিষয়ে ক্রেতাদের কাছে বিক্রেতাদের নানা প্রশ্নের সম্মুখিন হতে হচ্ছে।
একটি কোম্পানির ডিলার নাজমুল জানান, তাকে বাড়তি দামে গ্যাস কিনতে হচ্ছে। অস্থির এ বাজার শিগগিরই স্বাভাবিক হবে কি না এমন কোনো তথ্য তার কাছে নেই। অন্য একটি কোম্পানির ডিলার পারভেজ বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে গ্যাসের দাম বেড়েছে। তার প্রভাবেই গ্যাসের দাম বাড়ছে। গ্যাস সরবরাহের বিষয়ে পদ্মা ডিপোর এরিয়া ম্যানেজার আল মামুন বলেন, খুলনায় মাত্র ১ হাজার ২০০ গ্যাসের সিলিন্ডার তারা সরবরাহ করতে পারেন। যা চাহিদার তুলনায় কম বলে তিনি মন্তব্য করেন।
গ্রাহক অনুপ কুমার ঘোষ বলেন, প্রতি ২০-২৫ দিন পর পর আমার একটা করে গ্যাস লাগে। গত মাসে যে গ্যাস ৮৮০ টাকায় কিনেছি তা বর্তমানে ১ হাজার ৫০ টাকায় কিনতে হচ্ছে। গ্যাস নিয়ে বেশ অস্বস্তিতে আছি। দৌলতপুর আঞ্জুমান রোডের বাসিন্দা রবিউল ইসলাম বলেন, প্রায় ২০০ টাকা বেশি দিয়ে গ্যাস কিনতে হয়েছে। যে গ্যাসের দাম ছিল ৯০০ টাকা সেই গ্যাসের মূল্য দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৫০ টাকা। কোম্পানিগুলো ইচ্ছা মতো দাম বাড়িয়ে যাচ্ছে। কিন্তু প্রশাসন নীরব।
মেঘনা ডিপোর ম্যানেজার মো. আব্দুল্লাহ বলেন, এখন তারা সরবরাহ করেন মাত্র ২ হাজার সিলিন্ডার। প্রতি সিলিন্ডার গ্যাসের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৫৭৫ টাকা। ১৮৪ জন ডিলারের মাধ্যমে এ গ্যাস সরবরাহ করা হয় বলে তিনি জানান। খুলনা এলপি গ্যাস ব্যবসায়ী মালিক সমিতির সভাপতি শেখ মো. তোবারেক হোসেন তপু বলেন, খুলনা মহানগরীতে গ্যাসের চাহিদা রয়েছে ৪/৫ লাখ। ১২/১৪টি বেসরকারি কোম্পানি এসব গ্যাস সরবরাহ করছে। সরকারি গ্যাস না আসার কারণে বেসরকারি কোম্পানিগুলো ইচ্ছেমতো বাজার নিয়ন্ত্রণ করছে। তিনি বাজার তদারকির দাবি জানান।