পায়ে হেঁটে তিস্তা পারাপার!
খরস্রোতা তিস্তা নদী এখন পায়ে হেঁটে পারাপার করা যাচ্ছে। গত দুই মাস আগেও নদীর এ পাড় থেকে ও পাড়ে নৌকা দিয়ে পারাপার করতে হতো। এখন শুষ্ক মৌসুম হওয়ায় নদীতে হাঁটু পানি। ফলে মানুষজন প্রয়োজনীয় কাজের জন্য পায়ে হেঁটে নদী পারাপার করছে।
গত বর্ষা মৌসুমে পীরগাছা উপজেলার পাশ ঘেঁষে বয়ে যাওয়া তিস্তা নদীর দুই তীর প্লাবিত হয়ে লক্ষাধিক মানুষ পানি বন্দি হয়ে পড়ে। শত শত একর জমির ফসল পানির নিচে তলিয়ে নষ্ট হয়। একই সাথে তীব্র নদী ভাঙনের ফলে অনেক পরিবার গৃহহীন হয়ে পড়ে। ফলে দুই পাড়ের মানুষজনকে চরম ক্ষতির মুখে পড়তে হয়। নদী পারাপারে এক মাত্র ভরসা নৌকা হয়ে দাঁড়ায়। প্রতিবছর খরস্রোতা তিস্তা নদী পারাপারে নৌকা ডুবিতে একাধিক সলিল সমাধির ঘটনাও ঘটে। কিন্তু চলতি শুষ্ক মৌসুমে নদীতে পানি না থাকায় খরস্রোতা তিস্তা এখন মরা খালে পরিণত হয়েছে। দীর্ঘ চরের মাঝখান দিয়ে বয়ে চলা সামান্য খালের মধ্যে হাঁটু পানি পার হলেই এখন তিস্তা নদী পাড়ি দেয়া সম্ভব।
বৃহস্পতিবার (৩১ ডিসেম্বর) দুপুরে উপজেলার রহমত চর অংশে গিয়ে দেখা যায়, লোকজন পায়ে হেঁটে নদী পারাপার করছে। যেখানে বর্ষা মৌসুমে ওই এলাকায় একটি ঘাট থেকে প্রতিদিন নৌকা যোগে শত শত লোক নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রসহ নদী পারাপার করতেন।
উলিপুর থেকে পায়ে হেঁটে নদী পার হয়ে পীরগাছা উপজেলার রহমতের চর গ্রামে আসা ফুলজান বেগম বলেন, নিয়মিত আত্মীয়র বাড়িতে যাতায়াত করি। কিছু দিন আগেও নৌকায় চড়ে যাতায়াত করতে হতো। এখন নদীতে সামান্য পানি তাই পায়ে হেঁটে আসলাম। তেমন কোন সমস্যা হয়নি।
নদী পার হয়ে চরে কাজে যাওয়া একাব্বর আলী বলেন,তিস্তা এখন নানা রূপ ধারণ করে। এখন শুষ্ক মৌসুম নদীতে পানি নাই। নদী নয় যেন খালে হাঁটু পানি। তিস্তা নদী এখন সরু খাল। আমরা এই তিস্তা নদীর অভিশাপ থেকে মুক্তি চাই।
তিস্তা নদীর তীরের বাসিন্দা আকবর আলী জানান, প্রতি বছর খরস্রোত তিস্তা উপকারের চেয়ে ক্ষতিই বেশী করে যাচ্ছে। বর্ষা মৌসুমে বন্যাসহ নদী ভাঙনে দুই তীরের বাসিন্দারা ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হয়। আর শুষ্ক মৌসুমে পানির অভাবে চাষাবাদ ব্যাহত হচ্ছে। ফলে উভয় সংকটে পড়তে হয় দুই তীরের বাসিন্দাদের।