ট্রাম্পের শেষ দিনগুলো নিয়ে আতঙ্কে উপদেষ্টারা
আগামী ২০ জানুয়ারি দায়িত্ব গ্রহণ করবেন যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। কিন্তু প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এদিন হোয়াইট হাউজ ছাড়তে অস্বীকৃতি জানাতে পারেন। সম্প্রতি তিনি কয়েক জন উপদেষ্টাকে এ কথা বলেছেন। তিনি এখনো পরাজয় মেনে নেননি। চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন জো বাইডেনের জয়কে উলটে দিয়ে যে কোনোভাবে ক্ষমতায় থাকতে। প্রয়োজনে সামরিক শাসন জারির চিন্তাও রয়েছে তার। তাই মেয়াদের শেষদিনগুলোতে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আর কি পদক্ষেপ নেন তা নিয়ে আতঙ্কে রয়েছেন তার উপদেষ্টারা। আতঙ্ক কাজ করছে পেন্টাগনের কর্মকর্তাদের মধ্যেও। গতকাল মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনের পৃথক খবরে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এক কর্মকর্তা বলেন, সামনের পরিস্থিতি কি হবে তা কেউই নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না। কারণ ট্রাম্প আরো প্রায় একমাস ক্ষমতায় থাকছেন। সাম্প্রতিককালে ষড়যন্ত্র তত্ত্ব উত্থাপনকারী আইনজীবী সিডনি পাওয়েল, সাবেক জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইকেল ফ্লিন, সাবেক স্ট্রাটেজিস্ট স্টিভ ব্যানন ও বাণিজ্য উপদেষ্টা পিটার ন্যাভারোর মতো ব্যক্তিদের ওভাল অফিসে যাতায়াত বেড়েছে। বাইডেনের জয় আটকে দিতে আবারও সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেছে ট্রাম্প টিম। যদিও এই আবেদন মঞ্জুর হওয়ার সম্ভাবনা নেই। এমন অবস্থায় অনেকের আশঙ্কা, ট্রাম্পকে ক্ষমতায় রাখতে তারা হয়তো নতুন ষড়যন্ত্র করছেন।
ট্রাম্প তার প্রতিদিনের রাষ্ট্রীয় কাজ তেমন করছেন না। গত সপ্তাহে মন্ত্রিসভায় তিনি ভোট জালিয়াতি নিয়ে কথা বলেছিলেন। এখনো নির্বাচনের ফল নিয়ে কথা বলেই বেশির ভাগ সময় কাটাচ্ছেন। সোমবার চার্লি কিরক নামের এক কর্মীকে ট্রাম্প টেলিফোনে বলেছেন, আমরাই বিপুল ভোটে বিজয়ী হয়েছি। চার্লি সেই কথা ফ্লোরিডার ওয়েস্ট পাম বিচে ট্রাম্পের তরুণ সমর্থকদের শুনিয়েছেন।
চার্লিকে তিনি আরো বলেছেন, আমাদের সমস্যা হলো এখন একটি দল প্রয়োজন যারা লড়াই করতে পারবে। আমাদের সঙ্গে বেশ কয়েক জন কংগ্রেসম্যান রয়েছেন যারা এই কাজটি করছেন। এছাড়াও, এ কাজে আমাদের আরো অনেক মহান যোদ্ধা রয়েছেন। ট্রাম্প মনে করেন, তার সহযোদ্ধারা জানেন যে, নির্বাচনে তারাই বিপুল ভোটে জয়ী হয়েছেন। তাদের এখন দেশটির বিচার বিভাগের মতো আরো কয়েকটি সংস্থা ও জনগণের সমর্থন প্রয়োজন।
প্রেসিডেন্টের ঘনিষ্ঠ সূত্রের বরাত দিয়ে খবরে বলা হয়েছে, ট্রাম্পের এমন আচরণে উদ্বিগ্ন তার কয়েক জন উপদেষ্টা। তারা মনে করছেন, কয়েক দিন আগে যে সিডনি পাওয়েলকে আইনি টিম থেকে অপমান করে বের করে দেওয়া হয়েছিল তিনিই এখন ট্রাম্পের কাছে এসে হয়তো তাকে ‘লড়াই’ করতে প্ররোচিত করছেন। ভোট জালিয়াতির অভিযোগ তদন্তে ট্রাম্প বিশেষ কাউন্সেল নিয়োগের যে কথা বলেছেন সেটা সিডনি পাওয়েলেরই চিন্তা হতে পারে। এক কর্মকর্তা বলেন, মার-এ-লাগো রিসোর্টে ট্রাম্প বার্ষিক ছুটিতে যাচ্ছেন। সেখানে তার সঙ্গে থাকবেন এমন সব ব্যক্তি যারা তাকে লড়াই চালিয়ে যেতে উত্সাহ দেন। কোনো সম্ভাবনা না থাকার পরও ট্রাম্প যেভাবে ক্ষমতায় থাকার চেষ্টা করছেন সেটি খুবই ভয়ংকর।