নেপালে বিরোধীদের আইনি চ্যালেঞ্জের মুখে প্রধানমন্ত্রী
নেপালের প্রধানমন্ত্রীর পার্লামেন্ট ভেঙে দিয়ে নতুন নির্বাচনের সুপারিশকে আইনি পথে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছে বিরোধীরা। পার্লামেন্ট ভেঙে দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর আগাম নির্বাচনের ডাককে ‘সাংবিধানিক ক্যু’ অভিহিত করে এর নিন্দা জানিয়েছে তারা। গতকাল সোমবার নেপালের সুপ্রিম কোর্টের মুখপাত্র ভদ্রকালি পোখারেল জানিয়েছেন, পার্লামেন্ট বিলুপ্তির বিরুদ্ধে তিনটি পিটিশন দাখিল করা হয়েছে, সেগুলো ‘নিবন্ধনের প্রক্রিয়া চলছে’।
গত রবিবার দেশটির প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা অলি মন্ত্রিসভার জরুরি বৈঠক ডেকে পার্লামেন্ট ভেঙে দিয়ে আগাম নির্বাচনের সুপারিশ করেন। এতে করোনা ভাইরাসের সঙ্গে লড়াইরত দেশটিতে কয়েক মাস ধরে চলা রাজনৈতিক অস্থিরতা আরো বাড়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্তের পর সরকারের সাত জন মন্ত্রী পদত্যাগ করেছেন। এ সিদ্ধান্ত ২০১৭ সালের সাধারণ নির্বাচনে তাদের পক্ষে দেওয়া ‘গণরায়ের’ লঙ্ঘন বলে অভিযোগ করেছেন তারা। রাস্তায় নেমে আসা প্রতিবাদকারীরা প্রধানমন্ত্রীর কুশপুতুল পুড়িয়েছেন। বিক্ষোভকালে তারা বলেন, সংবিধান অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রীর পার্লামেন্ট বিলুপ্ত করার কোনো ক্ষমতা নেই। এটি একটি সাংবিধানিক ক্যু। আদালতের কাছে এ কারণে স্থগিতাদেশ চাওয়া হয়েছে।
সম্প্রতি নিজ দল নেপাল কমিউনিস্ট পার্টির (এনসিপি) মধ্যেই সমর্থন হারিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী অলি। তার বিরুদ্ধে সরকারি সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে মূল দলকে এড়িয়ে অন্তরঙ্গ একটি উপদলের সঙ্গে পরামর্শ করে সিদ্ধান্ত নেওয়ােবং গুরুত্বপূর্ণ নিয়োগের ক্ষেত্রে দলের সদস্যদের না নেওয়ার অভিযোগ এনেছেন বেশ কিছু সদস্য। অলিকে পদত্যাগের আহ্বান জানিয়েছেন এনসিপির ঐ সদস্যর
এদিকে কে পি শর্মা অলি গতকাল সোমবার বিকালে জাতির উদ্দেশে একটি ভাষণ দিয়েছেন। সেখানে তিনি পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়ার পক্ষে আত্মপক্ষ সমর্থন করেন। তিনি বলেন, ‘নেপাল কমিউনিস্ট পার্টির (এনসিপি) কিছু নেতার ক্ষমতালোভী মানসিকতার কারণেই আমাকে এমন সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে, যদিও আমি জানি এটা সবার কাছে অপ্রত্যাশিত ছিল।’ প্রধানমন্ত্রী আরো অভিযোগ করেছেন যে নির্বাচনের পরে জাতীয় রাজনীতিকে অস্থিতিশীল করার জন্য বারবার চেষ্টা করা হয়েছিল। তিনি আরো দাবি করেছেন, কিছু নেতা দেশ ও জনগণের কথা ভাবার চেয়ে পদ দখলের দিকে বেশি মনোনিবেশ করেছিলেন। ভাষণে অলি ‘অন্যান্য দলকে’ তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ আনেন।