বিয়ের জন্য চাপ দেওয়ায় প্রেমিকাকে হত্যা
প্রেমিকার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কে জড়িয়ে যায় এক ব্যক্তি এবং পরে মেয়েটি বিয়ের জন্য চাপ দিলে তাকে নিজ বাড়িতে ডেকে এনে শ্বাসরোধে হত্যা করে সে। হত্যার আগেও মেয়েটির সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করে ঐ পাষণ্ড। পরে পার্শ্ববর্তী নির্মাণাধীন ঘরের ভিটি খুঁড়ে লাশ মাটি চাপা দেয় সে। পরদিন বাড়ির মালিককে খুনি দ্রুত ঘরের ভিটি পাকা করার জন্য তাগিদ দেয়। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। দুর্গন্ধ পেয়ে লাশ আবিষ্কার করে ফেলেন বাড়ির মালিক।
সিলেটের জৈন্তাপুর ভারতীয় সীমান্তবর্তী পাহারি এলাকা থেকে আড়াইহাজারের সেই ‘প্রেমিক’ ইউনুছ আলীকে গ্রেফতারের পর গতকাল শনিবার এসব তথ্য জানিয়েছে নারায়ণগঞ্জের পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। পিবিআইয়ের নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার মো. মনিরুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, আড়াইহাজার থানার মানিকপুরে মামা ইলিয়াস মোল্লার বাড়িতে থাকতেন ফাতেমা আক্তার। তার ঠিক পাশের বাড়িতেই থাকতো আসামি ইউনুছ আলী। দীর্ঘ ৯ বছর মালয়েশিয়ায় প্রবাস জীবন কাটিয়ে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে সে দেশে আসে। এ সময় ফাতেমার নানী প্রায়ই ইউনুছকে বাড়িতে ডেকে আনতেন। এক পর্যায়ে ফাতেমার সঙ্গে ইউনুছ আলীর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। শারীরিক মেলামেশা শুরু করে তারা। ইউনুছ ও ফাতেমার প্রেমের সম্পর্কটি দুই বাড়িতেই জেনে যায়। এরই মধ্যে ইউনুস বাড়ি পালটে বিশনন্দী ভেংলায় নতুন বাড়িতে চলে যায়। এরপর থেকেই ইউনুছের বিয়ের জন্য বাড়ি থেকে পাত্রী খোঁজা শুরু হয়ে যায়। এদিকে গর্ভবতী হওয়ার আশঙ্কায় এবং ইউনুছের জন্য কনে দেখার খবর জানতে পেরে ফাতেমা বিয়ের জন্য ইউনুসকে চাপ দেয়। কিন্তু ইউনুছ রাজি ছিল না।
গত ১০ আগস্ট বিকালে ইউনুছ মোবাইল ফোনে ফাতেমাকে ডেকে আনে। বিভিন্ন জায়গা ঘুরে শেষে ইউনুছদের নতুন বাড়ির পেছনে গাছ গাছালী বেষ্টিত জায়গায় ফাতেমাকে রেখে বাড়ি যায় ইউনুছ। রাত ২টার দিকে সে ফাতেমার কাছে যায় এবং শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করে। একপর্যায়ে ইউনুছ পেছন থেকে বাহু দিয়ে ভিকটিমের গলা চেপে ধরে এবং শ্বাসরোধে ফাতেমাকে হত্যা করে। এরপর পার্শ্ববর্তী ডালিমের নির্মাণাধীন ঘরের ভেতর লাশ নিয়ে যায় এবং ভিটি খুঁড়ে লাশ মাটি চাপা দেয়। গত ১৫ আগস্ট ঐ বাড়ির মালিক ডালিম ঘরের ভিটি পাকা করতে গিয়ে দুর্গন্ধ পান এবং কোদাল দিয়ে বালু সরিয়ে ভিকটিমের অর্ধগলিত লাশ খুঁজে পান। পুলিশ খবর পেয়ে এসে লাশ মর্গে প্রেরণ করে এবং অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা রেকর্ড করে। পিবিআই উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে গত ১০ ডিসেম্বর সিলেটের জৈন্তাপুর থানায় বাংলাদেশ-ভারতের সীমান্তবর্তী পাহাড়ি এলাকায় ঘণ্টাব্যাপী অভিযান চালিয়ে ইউনুছ আলীকে গ্রেফতার করে। এরপর তার কাছ থেকে পাওয়া যায় হত্যাকাণ্ডের লোমহর্ষক বর্ণনা।