চিকন চাল নিয়ে বড় কারসাজি
চালের বাজারে অস্থিরতা ক্রমশ বাড়ছে। মোটা চালের দাম সহনীয় পর্যায়ে থাকলেও সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীরা চিকন চাল নিয়ে কারসাজি করছে। বাজারে চিকন চালের চাহিদা বেশি।
পাইকারি ব্যবসায়ীরা জানান, গত ১৫ দিন যাবত্ কয়েক দফায় চিকন চালের দাম বেড়েছে। এখন মিলের মালিকেরা চিকন চালের সংকটের অজুহাত দেখিয়ে সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছে। বাজারের চাহিদা অনুপাতে চাল পাচ্ছেন না পাইকারি ব্যবসায়ীরা। মিলের মালিক ও মধ্যস্বত্বভোগীরা নতুন ধান-চাল মজুতের প্রতিযোগিতায় নেমেছেন।
পাইকারি বিক্রেতারা জানান, মূলত চিকন চাল নিয়ে কারসাজি চলছে। এখন আমনের ভরা মৌসুম। তার পরও চালের দাম ঊর্ধ্বমুখী। মিলের মালিকেরা অর্ডার নিয়ে চাহিদা অনুপাতে চাল সরবরাহ দিচ্ছেন না। এতে বাজারে চিকন চালের সংকট দেখা দিয়েছে। ফলে পাইকারিতে দাম বাড়ছে। চট্টগ্রামে চালের বাজার উত্তরাঞ্চলের চালের ওপর নির্ভরশীল। বৃহত্তম চট্টগ্রামে দিনাজপুর, কুষ্টিয়া, নওগাঁ থেকে চাল আনা হয়। প্রতিদিন অন্তত ২০০ গাড়ি চাল আসে বৃহত্তম চট্টগ্রামের পাইকারি বাজারগুলোতে। চট্টগ্রামের পাহাড়তলী, চাক্তাই, কাজীরহাট ও বহদ্দারহাট এলাকায় চালের প্রধান পাইকারি বাজার।
এসব বাজার থেকে খুচরা ও পাইকারি ব্যবসায়ীরা চাল নিয়ে থাকেন। পাইকারি ব্যবসায়ীরা জানান, গত ১৫ দিনের মধ্যে দুই দফায় চিকন চালের দাম বেড়েছে। এখন মূল্যবৃদ্ধির পর সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছেন মিলের মালিকেরা। এ কারণে বাজার অস্থির হয়ে উঠেছে। চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে দীর্ঘদিন যাবত্ চাল আমদানি হচ্ছে না। আমদানিকারকদের গুদামে কোনো চাল নেই। বর্তমানে চাল মজুত আছে উত্তরাঞ্চলের মিল মালিক ও মধ্যস্বত্বভোগী ব্যবসায়ীদের কাছে। এখন তারাই চালের বাজার জিম্মি করে রেখেছেন। চালের বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকারের পক্ষ থেকে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না বলে ব্যবসায়ীদের অভিযোগ।
ব্যবসায়ীরা জানান, এখন আমনের ভরা মৌসুম। আমন ধান উত্তোলন চলছে। ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, দুই ধরনের লোক ধান কিনে গুদামে মজুত করছেন। মিলের মালিক ও মধ্যস্বত্বভোগীরা ধান কিনে মজুত করার প্রতিযোগিতায় নেমেছেন। মিলের মালিকদের সরকারি লাইসেন্স থাকলেও মৌসুমি মধ্যস্বত্বভোগীদের কোনো লাইসেন্স নেই। এ ক্ষেত্রে সরকারের পক্ষ থেকে তদারকিও করা হচ্ছে না।
পাহাড়তলী বাজার বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক এস এম নিজাম উদ্দিন ইত্তেফাককে বলেন, ‘পাইকারি ব্যবসায়ীরা অর্ডার দিয়েও চাল সরবরাহ পাচ্ছেন না। মিলের মালিকেরা চিকন চালের সরবরাহ কমিয়ে দেওয়ায় বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরি হচ্ছে। এখন সরকারের উচিত চাল আমদানির অনুমতি দেওয়া। না হলে সামনের চালের বাজার নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়ে পড়বে।’