টানা তিন দিন লাখের বেশি রোগী শনাক্ত যুক্তরাষ্ট্রে
সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ে হিমশিম খাওয়া যুক্তরাষ্ট্রে টানা তিন দিন লাখের বেশি কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়েছে। শুক্রবার একদিনেই দেশটিতে রেকর্ড এক লাখ ২৯ হাজারের বেশি আক্রান্তের সন্ধান মিলেছে। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ডামাডোলের মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রে এ নিয়ে মোট চারদিন এক লাখের বেশি নতুন রোগী শনাক্ত হলো। সংবাদসূত্র : রয়টার্স
করোনাভাইরাস সংক্রমণ ও মৃতু্য বিবেচনায় বিশ্বের দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশ যুক্তরাষ্ট্রে গত এক সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৯৫ হাজার মানুষের দেহে প্রাণঘাতী এই ভাইরাসের উপস্থিতি শনাক্ত হয়েছে। শুক্রবার দেশটির ৫০টি অঙ্গরাজ্যের মধ্যে ২০টি রেকর্ডসংখ্যক কোভিড-১৯ রোগী দেখেছে। আগের দিনও ওই রাজ্যগুলোতে একই চিত্র ছিল। বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রে প্রথমবারের মতো দৈনিক শনাক্ত এক লাখ ২০ হাজারের ঘর অতিক্রম করেছিল।
জনসংখ্যা অনুপাতে রোগী বিবেচনায় মহামারিতে দেশটির মধ্য-পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্যগুলো এখনো সবচেয়ে বেশি নাজুক অবস্থায় রয়েছে। শুক্রবার সবচেয়ে বেশি রোগী মিলেছে ইলিনয় রাজ্যে। এদিন রাজ্যটিতে প্রথমবারের মতো ১০ হাজারের বেশি মানুষের দেহে করোনার উপস্থিতি শনাক্ত হয়েছে।
রেকর্ড পরিমাণ রোগী শনাক্ত হয়েছে ইনডিয়ানা, ক্যানজাস, মিনেসোটা, মিসৌরি, নেব্রাস্কা, ডেকোটা, ওহিও এবং উইসকনসিনে। আরকানস, কলোরাডো, আইডাহো, মেইন, নেভাদা, নিউ মেক্সিকো, নর্থ ক্যারোলাইনা, রোড আইল্যান্ড, উটাহ, ওয়াশিংটন এবং ওয়াইওমিং দৈনিক শনাক্তের রেকর্ড দেখেছে।
উইসকনসিনে ভবন কিংবা ঘরের ভেতর এর ধারণক্ষমতার ২৫ শতাংশের বেশি লোক জড়ো হওয়া যাবে না বলে গভর্নর টনি এভারস যে আদেশ দিয়েছিলেন, একটি আপিল আদালত সেটা আটকে দিয়েছে। এভারসের আদেশটির মেয়াদ শুক্রবার শেষ হয়ে যাওয়ার কথা ছিল। রাজ্যে একদিনে রেকর্ড ছয় হাজারের বেশি রোগী শনাক্ত হওয়ার দিকে ইঙ্গিত করে উইসকনসিনের এই গভর্নর আদালতের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানানোর ঘোষণা দিয়েছেন।
সংক্রমণের বিস্তৃতি রোধে যুক্তরাষ্ট্রের বেশ কয়েকটি রাজ্য ও শহর এরই মধ্যে কারফিউ এবং বেশি মানুষের জমায়েতে লাগাম টানার মতো পদক্ষেপ নিলেও কেন্দ্রীয়ভাবে কঠোর কোনো বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়নি। ১৭টি রাজ্যে মাস্ক পরার ব্যাপারেও তেমন কোনো নির্দেশনা নেই।
সংক্রমণের এই ঊর্ধ্বগতির মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের হাসপাতালগুলোতে রোগী ভর্তির সংখ্যাও হুহু করে বাড়ছে। টেক্সাসে শুক্রবার ৯ হাজারের বেশি কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম রাজ্য হিসেবে মোট ১০ লাখ রোগীর মাইলফলক পেরিয়ে যাওয়ার পথে রাজ্যটি দ্রম্নতগতিতে অগ্রসর হচ্ছে।
হোয়াইট হাউসের চিফ অব স্টাফ করোনায় আক্রান্ত
এদিকে, পরীক্ষায় হোয়াইট হাউসের চিফ অব স্টাফ মার্ক মেডৌসের করোনাভাইরাস পজিটিভ এসেছে বলে মার্কিন গণমাধ্যম জানিয়েছে। কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হয়ে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার এক মাস পর তার চিফ অব স্টাফ আক্রান্ত হলেন।
গত মাসের প্রথমদিকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচার চলাকালে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হন ট্রাম্প। একই সময় তার স্ত্রী মেলানিয়া ট্রাম্প ও ছেলে ব্যারন ট্রাম্পও আক্রান্ত হয়েছিলেন। প্রায় একই সময় হোয়াইট হাউসের অনেক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাও করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিলেন।