রাজশাহী শিক্ষাবোর্ড চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে বিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ
মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ড রাজশাহীর চেয়ারম্যান অধ্যাপক মকবুল হোসেনের বিরুদ্ধে বোর্ডের প্রজ্ঞাপনের বিধি লঙ্ঘনের গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। তিনি একটি স্কুল অ্যান্ড কলেজের গভর্নিং বডির অ্যাডহক কমিটির সভাপতি পদে নিজের ‘পছন্দের’ লোককে দায়িত্ব দিয়েছেন বলে অভিযোগ তুলে উক্ত বডির গুরুত্বপূর্ণ দুই সদস্য ইতিমধ্যে পদত্যাগ করেছেন।
অভিযোগের ব্যাপারে বোর্ড চেয়ারম্যানের দাবি, উপরের মহল থেকে তদবির আসার পরিপ্রেক্ষিতে তিনি এই কাজ করেছেন। বোর্ডের সূত্রগুলো জানায়, বিধি মেনে বগুড়ার শাহজাহানপুর উপজেলাধীন গোহাইল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ গভর্নিং বডির অ্যাডহক কমিটিতে সভাপতি মনোনয়নের জন্য তিনজন ব্যক্তির নাম বোর্ড চেয়ারম্যানের কাছে পাঠানো হয়। সেই তিনজন ব্যক্তির মধ্য থেকে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব একজনকে মনোনয়ন দেওয়া। কিন্তু চেয়ারম্যান সেটি না করে তিনজনের বাইরে অপর এক ব্যক্তিকে সভাপতি পদে মনোনয়ন দিয়েছেন। প্রথমত যে ব্যক্তিকে চেয়ারম্যান মনোনয়ন দিয়েছেন তার বিরুদ্ধে বিস্তর অভিযোগ রয়েছে। দ্বিতীয়ত চেয়ারম্যানের পছন্দের ব্যক্তিকে নিয়োগ দিতে গিয়ে শিক্ষাবোর্ডের প্রজ্ঞাপনের স্পষ্ট লঙ্ঘন ঘটিয়েছেন।
২০০৯ সালের ১৬ জুন তারিখে জারিকৃত শিক্ষাবোর্ডের প্রজ্ঞাপনের ৫ নং ধারায় গভর্নিং বডির সভাপতি মনোনয়ন প্রক্রিয়া উল্লেখ রয়েছে। ৫ এর ৩ উপপ্রবিধান (২) এ বলা আছে-প্রতিষ্ঠান প্রধান তিনজন ব্যক্তির নাম ও জীবনবৃত্তান্ত চেয়ারম্যান বরাবর পাঠাবেন। এই তিনজন ব্যক্তিকে বাছাই করার জন্য প্রতিষ্ঠান প্রধান স্থানীয় সংসদ সদস্য ও শিক্ষানুরাগীদের সাথে আলোচনা করবেন। প্রতিষ্ঠান প্রধানের পাঠানো তিনটি নাম থেকে বোর্ড চেয়ারম্যান যাকে পছন্দ করবেন তাকেই মনোনয়ন দিবেন। ২০১৬ সালের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক পরিপত্রেও অনুরূপ কথা বলা আছে।
এসব বিধি মেনে গোহাইল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মোতাহার হোসেন গত ২ সেপ্টেম্বরও তিনজনের নাম শিক্ষাবোর্ড চেয়ারম্যান বরাবর পাঠান। তিনজনের সেই তালিকায় স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আলী আতোয়ার তালুকদার ফজু, সমাজসেবক আবু বক্কর সিদ্দিক ও সমাজসেবক আতাউর রহমানের নাম রয়েছে। বোর্ড চেয়ারম্যানের বিধি অনুযায়ী ওই তিনজনের যে কোনো একজনকে মনোনয়ন দিবেন।
কিন্তু চেয়ারম্যান প্রজ্ঞাপনের ৫ এর ৩ উপপ্রবিধান (২) লঙ্ঘন করে সাবেক ছাত্রদল নেতা ও বর্তমানের যুবলীগের ছায়াতলে আসা আলী ইমামকে মনোনয়ন দিয়েছেন। আলি ইমাম এর আগে পোয়ালগাছা স্কুলের সভাপতি থাকাকালীন সরকারি গাছ কেটে বিক্রি করেছিলেন এমন অভিযোগ রয়েছে। এমন ব্যক্তিকে মনোনয়ন দেয়ায় গোহাইল স্কুল অ্যান্ড কলেজে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। এর প্রতিবাদে প্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডির ২ সদস্য পদত্যাগ করেছেন।